বিশেষ প্রতিবেদক
মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যাকাণ্ডে বরখাস্তকৃত টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে এবার চাহিদামতো টাকা না দেয়ায় এক সিএনজি চালককে বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
কক্সবাজারের জৈষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম (টেকনাফ-৩) মো. হেলালের আদালতে বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় আবদুল জলিল নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার এই অভিযোগ আনেন তার স্ত্রী সেনোয়ারা বেগম।
বাদীর আইনজীবী মনিরুল ইসলাম বলেন, আবদুল জলিলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে প্রদীপ কুমার দাশসহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আবদুল জলিলের ময়নাতদন্ত হয়েছে কিনা, এ ঘটনায় টেকনাফ থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেছে আাদলত।
নিহত আবদুল জলিলের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আবদুল জলিল উপজেলার পশ্চিম মহেশখালীয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
বাদী পক্ষের আইনজীবী বলেন, বাদীর দায়ের করা ফৌজদারি এজাহারটি আমলে নেন। ওই কথিত বন্দুকযুদ্ধ সংক্রান্ত মামলার এহাজারসহ সকল কাগজপত্র আগামী ১০ সেপ্টেম্বর আদালতে দাখিল করার জন্য টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এজাহারে বাদী জানান, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর পারিবারিক কাজে কক্সবাজারে অবস্থানকালে একদল সাদা পোশাকধারী আল ফুয়াদ হাসপাতালের সামনে থেকে আবদুল জলিল ও তার সাথে থাকা রফিক উল্লাহ একজন আটক করে। এরপর তাকে টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আটকের ১২ দিন পর একটি জিআর মামলা করে রফিক উল্লাহকে আদালতে প্রেরণ করা হলেও আবদুল জলিলকে ছাড়া হয়নি। কিন্তু আটকের তিন মাস পর্যন্ত আবদুল জলিলের কোন খোঁজ পায়নি পরিবার। এর মধ্যে গত ৩ মার্চ হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমান জলিলের বাড়িতে গিয়ে তাকে ক্রসফায়ারে না দেয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। ১৬ মার্চ ৫ লাখ টাকা আদায় করেন আসামিরা। আটকের স্বীকার করলেও ৫ লাখ টাকা নেয়ার দুই তিন মাসও জলিলকে আদালতে পাঠায়নি পুলিশ। এর মধ্যে গত ১০ জুলাই জলিলকে টেকনাফ থানা হেফাজতে রয়েছে জানতে পারে পরিবার। তারপরও বহুবার তদবির করেও আবদুল জলিলকে আদালতে তোলা হয়নি। এর মধ্যে গত ৭ জুলাই রাতে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কম্বনিয়া বড় ছড়া এলাকায় এনে সিএনজি চালক আবদুল জলিলকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয় বলে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন।