চাঁদাবাজি অপহরণ সংঘর্ষে অশান্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্প
চাঁদাবাজি, অপহরণ ও আধিপত্য বিস্তার- এ নিয়ে থমথমে পরিস্থিতি কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোঙ্গিাদের দুটি ক্যাম্প কুতুপালং ও নোয়াপাড়া। গত কয়েকদিনে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। আহত হয়েছেন অনেকে, হয়েছেন গুলিবিদ্ধও। সব মিলিয়ে আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে ক্যাম্প এলাকায়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং শান্ত রয়েছে বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে কুতুপালং রেজিস্টার্ড ও আন-রেজিস্টার্ড এবং নোয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝামাঝি স্থানে দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চাঁদাবাজি, অপহরণ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দফায় দফায় এ সংঘর্ষে ১৬ রোহিঙ্গা আহত হয়। এর আগে নূর আলম নামে এক রোহিঙ্গাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে কক্সবাজার পরে চট্টগ্রাম হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি কুতুপালং টু-ইস্ট ক্যাম্পের আহমদ হোসেনের ছেলে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।
এদিকে আল ইয়াকিনের (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির স্থানীয় নাম) শীর্ষনেতা মুন্না গ্রুপ তিনদিনে ১০ রোহিঙ্গাকে অপহরণ করেছে। এর মধ্যে মুক্তিপণ দিয়ে গত রবিবার সকালে ফিরে এসেছে ছয়জন। তারা হলেন- কুতুপালং রেজি. ক্যাম্পের বি ব্লকের রহমত উল্লাহ, ডি ব্লকের মৌলভী জিয়াবুর রহমান, ছৈয়দ আকবর, এফ ব্লকের আনিস উল্লাহ ও এজাহার, জি ব্লকের মো. জসিম। বাকি চারজন এখনো অপহরণকারীদের হাতে জিম্মিদশায় রয়েছেন।
মো. আমির নামে এক রোহিঙ্গা জানান, ছয়দিন ধরে অপহরণ, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের ই-ব্লকের মোহাম্মদ ফরিদ ও এফ ব্লকের নুর হাশিম, মাস্টার মুন্না এবং আনরেজিস্টার্ড ক্যাম্পের আল ইয়াকিন নেতা রফিক উদ্দিন, হাফেজ জাবেদ ও সাইফুলের মধ্যে অন্তর্কোন্দল শুরু হয়। এর পর থেকে ক্যাম্পের পরিবেশ অশান্ত হয়ে ওঠে। এ বিষয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) পরিদর্শক মো. সালেহ আহমদ পাঠান বলেন, ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে থাকে। এটিও তাই। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অন্যদিকে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই ‘ডাকাত’ দলের মধ্যে গোলাগুলিতে চারজন আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নিবন্ধিত নয়াপাড়া ক্যাম্পের ই ও সি ব্লকের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে এইচ ব্লকের বাসিন্দা রহমত উল্লাহ, মো. জালাল, সৈয়দ আলম ও আবদুস সালাম।
ক্যাম্পের বাসিন্দা মাঝি মোস্তফা কামাল বলেন, দুই ডাকাত দলের গোলাগুলিতে চারজন আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। এ ঘটনায় ক্যাম্পের লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তা ছাড়া ক্যাম্পের ডাকাত দল ফের সক্রিয় হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।
নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এপিবিএন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাতে নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ডাকাত জকির ও সালমান শাহের দলের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে চারজন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে ক্যাম্প স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা অবনতি হওয়ায় কক্সবাজার হাসপাতালে পাঠানো হয়। ডাকাতদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) এবিএমএস দোহা বলেন, কয়েকদিন ধরে কিছু রোহিঙ্গা পাহাড়ে তাদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটায়। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিনিয়ত পাহাড়ে ও ক্যাম্পের আশপাশে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
সম্পাদক মো. দুলাল মিয়া নির্বাহী সম্পাদকঃ মো.স্বপন মজুমদার বার্তা সম্পাদক এম.এ তাহের অফিস ১৯৫ ফকিরাপুল প্রথম গলি রহমান ম্যানশন (৩য় তলা) মতিঝিল ঢাকা ১০০০ এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন এর মুখপএ যোগাযোগ ও নিউজ এর জন্য ইমেল uttaron24@gmail.com সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০০৭- ২০২০ দৈনিক উত্তরণ এ প্রকাশিত কোনও সংবাদ. তথ্য.ছবি কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। |
zahidit.com