আজ || বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
  বাহরাইনে প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধন দৃর করার লক্ষে মিলন মেলা ও নৈশভোজ অনুষ্ঠিত       ডিআইজি মোঃ মনিরুজ্জামান কে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করেন নবীনগর সমাজ কল্যাণ ঐক্য পরিষদ বাহরাইন       পবিএ ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বাংলাদেশ মাইজভাণ্ডারী গাউছিয়া হক কমিটি বাহরাইন শাখার উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল অনুুষ্ঠিত       বাহরাইনে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে উচ্ছ্বসিত প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা       বৃহত্তর কুমিল্লার নামে বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য সমাবেশের আয়োজন করেন কুমিল্লা প্রবাসী কল্যান ফোরাম বাহরাইন       বাহরাইনে বাংলাদেশি মালিকানাধীন “হুইল ব্যালেন্স অটো সার্ভিস” এর শুভ উদ্বোধন       বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট বাহরাইন শাখার উদ্যোগে মহানবমী পূজা পালিত,পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূত মো. রইস হাসান সরোয়োর       গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আবদুল আউয়াল মিন্টু       বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল বাহরাইন গুদাবিয়া শাখার উদ্যোগে আলোচনায় সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত       ফেনীর দাগনভূঞায় ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সনদ বিতরণ    
 


অবশেষে ইউপি চেয়ারম্যানকে তালাক দিলেন সেই কিশোরী নাজমিন আক্তার

অনলাইন ডেস্ক :

অবশেষে সেই ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে তালাক দিলেন কিশোরী নাজমিন আক্তার ওরফে নছিমন (১৪)। চেয়ারম্যানের আয়লা বাজারস্থ বাসায় বসে তিনি তালাকনামায় স্বাক্ষর করেন। এরপর চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজে নছিমনকে তার অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন। নছিমন নিজেই যুগান্তরকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে নছিমন তার তালাকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় নছিমন অনেক অজানা তথ্য দিয়েছেন। কথা বলার সময় অপরপ্রান্তে নছিমনকে খুব উৎফুল্ল মনে হয়েছে।

নছিম জানান, তিনি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তেন তখন তার নানা ইউনুস কাজীর বাড়ির সামনে মসজিদে ইমামতি করতেন রমজান। এই রমজানের কাছে তিনি কোরআন শরীফ পড়তেন। কোরআন শরীফ পড়তে গিয়ে এক পর্যায়ে রমজানের সঙ্গে তার প্রেম হয়। তিন বছর ধরে চলে এই প্রেম। এই ঘটনা জানাজানি হয়ে যাওয়ার পরে কয়েক মাস রমজানের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ ছিল। পরে একটি মাধ্যমে রমাজানের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তার সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ হয়। ২৫ জুন সালিশ বৈঠকের জন্য তিনিসহ তার ও রমজানের পরিবারের অভিভাবকরা চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের বাড়িতে আসেন। তখনো তিনি বুঝতে পারেননি একটি অঘটন ঘটতে যাচ্ছে।

নছিমন আরও জানান,‘ ১৮ মে তার বাবা-মায়ের ইচ্ছে অনুযায়ী তার দাদীর ফুফাতো বোনের ছেলে তাঁতেরকাঠি গ্রামের সোহেল আকনের কাছে বিয়ে দেন। বিয়ের পর নুরাইনপুর বন্দরে বসে তাদের এক ঘণ্টার জন্য দেখা হয়েছিল। কোরবাণীর ঈদে তাকে স্বামীর বাড়ি তুলে দেওয়ার কথা ছিল। তিনি বিয়েতে রাজি ছিলেন না বলেই রমজানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন। এরপর দুইজনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২৪ জুলাই ভবিষ্যৎ স্বপ্ন বুনতে তারা ঘর ছাড়েন। চুনারপুল নামক এলাকা থেকে বাইকযোগে রমজান আর তিনি চলে যান কনকদিয়া ইউনিয়নের কুম্বখারী রমজানের মামা শাহ আলমের বাড়িতে। ওই বাড়িতে তারা দুই দিন ছিলেন। পরে তার বাবা নজরুল ইসলাম বিষয়টি কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে অবহিত করেন। তিনি শুক্রবার সালিশ বৈঠকে বিষয়টি ফয়সা করে দেবেন বলে জানান।

সেই অনুযায়ী উভয় পরিবারের লোকজন সকালে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদের বাড়ি যান। এ সময় চেয়ারম্যান তাকে অন্য একটি রুমে ডেকে নিয়ে বলেন, ‘ ওই ছেলেরতো (রমজানের) টাকা-পয়সা নেই। তুমি তার ঘরে গিয়ে সুখি হতে পারবা না। বরং আমাকে বিয়ে করলে সুখী হবে।’ নছিমন তার কথায় রাজি হননি। তিনি মনে করেছিলেন বুড়ো দাদু (চেয়ারম্যান) তার সঙ্গে দুষ্টমি করছেন। পরে তিনি রুম থেকে বেড় হয়ে সবার উদ্দেশ্যে বলেন, রমজানকে বিয়ে করতে হলে তো আগের স্বামীকে (সোহেল আকন) তালাক দিতে হবে। এরপর কাজী ডেকে এনে তাই করা হলো। এর পর ঘটলো যতো অঘটন। চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজে তাকে বিয়ে করবেন বলে জানান। তার যেই কথা সেই কাজ। তাকে একরকম প্রতারণা করেই বিয়ে করেন। ৫ লাখ টাকা কাবিন করেন। বিয়ের রাতে চেয়ারম্যান তার শোওয়ার রুমে ঢুকতে চাইলে তিনি তাকে ঢুকতে দেননি। ভেতর থেকে দরজা আটকে দেন। এর বাইরে যা যা তার সঙ্গে হয়েছে তা ছিল সব তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে।

শনিবার রাতে শাহিন হাওলাদারের ছেলে তুষার এবং অন্যান্য আত্মীয় স্বজন ও প্রশাসনের চাপে শাহিন হাওলাদার তাকে তার জিম্মিদশা থেকে মুক্তি দিতে রাজি হন। রাতেই ওই কাজীকে ডাকা হয়। এরপর তার কাছ থেকে তালাক নামায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়। পরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজেই তাকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন। ওই সময় তার নানা ইউনুস কাজী, বাবা ও সাবেক ইউপি মেম্বার নুরুল ইসলাম তাকে বাবার বাড়ির মাঝ পথ পর্যন্ত এগিয়ে দেন। সেখান থেকে তিনি রমজানের সেই মামা শাহআলমের বাড়িতে চলে যান। রমজানের মামাতো ভাই পলাশ তাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান।

নছিমন বলেন, ‘আমি দারুন খুশি। ধন্যবাদ আপনাকে, ধন্যবাদ যুগান্তরকে। ধন্যবাদ জানাই অন্যান্য সাংবাদিক ভাইদের।’

 


Top